পৃষ্ঠাসমূহ

.

Search Your Article

Total Pageviews

Sunday, October 1, 2017

আমলকী ও মধু প্যাক-




সাধারণত আমলকী আমরা খেয়ে থাকি মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে্। কিন্তু জানেন কি এ আমলকি আমাদের অনেক উপকারে আসে। এ ফলটি ত্বক, চুল ও দেহের জন্য উপকারীতা পাওয়া যায়।
মলকী খেতে তেমন মুখরোচক না হলেও এর গুণের কিন্তু শেষ নেই। এটি এমন একটি উপকারী ফল যা শারীরিক বিভিন্ন উপকারের পাশাপাশি রূপচর্চায়ও সমান প্রশংসার যোগ্য। প্রোটিন, মিনারেলস, কার্বহাইড্রেটস এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ এই ফলটি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে ত্বক এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এ ফলের গুণাগুণ সম্পর্কে-


ত্বকের যত্নেঃ
• আমলকীতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে রিংকেল, ফাইন লাইন্স পড়তে দেয় না।
• আমলকি খুব ভালো এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে। এতে থাকা এস্ট্রিনজেন্ট প্রপার্টিজ ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক মসৃণ করে তোলে।
• আমলকীর আরেকটি বিশেষ গুণ হল এটি সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যায়। কোন ত্বকেই এটি কোন ধরনের ইরিটেশন তৈরি করে না।
• ত্বকের পিগমেনটেশন দূর করতে আমলকী খুব ভালো কাজ করে থাকে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের নিস্তেজ ভাব দূর করে ত্বক প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল করে।


স্ক্রাব:
• একটি বাটিতে ১ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা নিন।
• এর সাথে ১ চা চামচ আমলকী পাউডার মেশান।
• এই মিশ্রণটি সারা মুখে সার্কুলার মোশনে মাখিয়ে নিন।
• ১০ মিনিট রেখে মুখ ভালো মতো ধুয়ে নিন।
এই স্ক্রাবটি ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে। আর যেহেতু এতে কাঁচা হলুদ বাটা রয়েছে তাই এই স্ক্রাবটি রাতে ব্যবহার করবেন। দিনের বেলা কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে সূর্যের আলোতে ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



ফেসিয়াল:
• একটি বাটিতে ২ চা চামচ টক দই নিন।
• এর সাথে ১ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ আমলকী পেস্ট নিয়ে ভালো মতো মিশিয়ে নিন।
• মিশ্রণটি সারা মুখে ভালো মতো লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই ফেসিয়ালটি সপ্তাহে ২ দিন করতে পারেন। এটি ত্বকে সতেজ ভাব নিয়ে আসে এবং সব ধরনের ত্বকের জন্যই এই ফেসিয়ালটি উপযুক্ত।


মাস্ক-
• কয়েক টুকরা পেঁপে একটি বাটিতে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
• এর সাথে ১ চা চামচ আমলকী পেস্ট এবং আধা চা চামচ মধু ভালো মতো মিশিয়ে নিন।
• এবার এটি মুখে মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
মুহূর্তের মধ্যেই ত্বকে উজ্জ্বল ভাব নিয়ে আসতে এই মাস্কটি বেশ উপকারী। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের পিগমেনটেশন এবং কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।


চুলের যত্নেঃ
• শরীরে ভিটামিন সি এর অভাবে চুল পড়া বেড়ে যায় এবং চুল ভেঙ্গে পড়ে। আমলকীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই নিয়মিত আমলকী খাওয়ার মাধ্যমে চুলের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব।
• আমলকীতে থাকা প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট অকালে চুল পাকা রোধ করে।
• আমলকীর রস চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং চুলের বৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হয়।
• এছাড়াও আমলকী চুলের ফলিকল শক্ত করে যার ফলে চুল পড়া কমে গিয়ে চুল নরম ও সিল্কি হয়।



আমলকী মধু প্যাক-
• ২ চা চামচ আমলকী পাউডার হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
• এর মধ্যে ২ চা চামচ টক দই এবং ১ চা চামচ মধু যোগ করে ভালো মতো মেশান।
• এবার মিশ্রণটি চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো মতো লাগিয়ে নিন।
• ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

এই প্যাকটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলের রুক্ষভাব দূর করে চুল নরম ও সুন্দর করে তোলে। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করুন।



এন্টি ড্যানড্রাফ প্যাক-
• একটি বাটিতে ২ চা চামচ আমলকী এবং শিকাকাই পাউডার নিন।
• এর সাথে পরিমাণ মতো টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
• প্যাকটি সারা চুলে ভালো মত লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।


এটি সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন। এই প্যাকটি স্ক্যাল্পের খুশকি দূর করার সাথে সাথে চুলের প্রাকৃতিক কালার বজায় রাখে।


শ্যাম্পু-
• পরিমাণ মতো শুকনো আমলকী, শিকাকাই এবং রিঠা একসাথে পানিতে মিশিয়ে সারারাত রেখে দিন।
• ব্যবহারের আগে একসাথে ভালো মতো মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি পিচ্ছিল হবে। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে দানা গুলো আলাদা করে নিন।
• এটি চুলে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
এটি প্রাকৃতিক শ্যাম্পু হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। সপ্তাহে ১ বার এটি ব্যবহার করুন। চাইলে একসাথে বেশি পরিমাণে বানিয়ে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment